অভিবাসী পরিবার থেকে উঠে আসা কমলার সামনে ইতিহাস গড়ার হাতছানি। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের দুইশ বছরের ইতিহাসে কমলাই হবেন প্রথম কোনো নারী প্রেসিডেন্ট।
নিজস্ব প্রতিবেদক,
কমলা হ্যারিস এবার নাটকীয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়েছেণ। দেশটিতে বেশ দীর্ঘ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ধাপ পাড়ি দিয়ে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে হয়। সেখানে ভাগ্য কতটা সহায় হলে কোন প্রকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়া যায় তার প্রমাণ কমলা হ্যারিস।
ডেমোক্র্যাট দলের পূর্ব ঘোষিত প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বয়স ও শারীরিক যোগ্যতা বিবেচনায় নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে তারই রানিং মেট কমলার নাম প্রস্তাব করেন।
পরে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চূড়ান্ত মনোনয়ন পান কমলা। যা যুক্তরাষ্ট্রে নজিরবিহীন। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এরই মধ্যে হোয়াইট হাউজ তার বেশ পরিচিত। তবে এবারের জন রায়ে বিজয়ী হলে চেয়ার বদল হয়ে বসবেন প্রেসিডেন্টের আসনে।
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে একসঙ্গে দুটি ইতিহাস গড়েন কমলা। ১৯৬৪ সালের ২০ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ড শহরে কমলার জন্ম। মা শ্যামলা গোপালন হ্যারিস ছিলেন পেশায় ক্যানসার গবেষক ও নাগরিক অধিকারকর্মী। জ্যামাইকান-আমেরিকান বাবা ডোনাল্ড জ্যাসপার হ্যারিস ছিলেন অর্থনীতিবিদ।
শৈশবে তার মা-বাবার বিচ্ছেদ হলে ফ্রান্সিসকোতে মায়ের কাছে বড় হন কমলা। পরবর্তীতে মায়ের কাছেই মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই আর সংস্কৃতির চর্চা শুরু তার।
ওয়াশিংটন ডিসির হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে তিনি পড়াশোনা শুরু করে শেষ করেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ২০১৪ সালে আইনজীবী ডগ এমহফের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন কমলা। এরপর প্রথমে এটর্নি পরে ২০১৭ সালে তিনি প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় অঙ্গরাজ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রোট দলীয় সিনেটের নির্বাচিত হন।
মাত্র চার মাসের প্রচারণায় বিপুল জনসমর্থন পেয়ে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল টেলিভিশন বিতর্কে প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধরাশায়ী করেন কমলা। তার এই আকস্মিক উত্থান ট্রাম্পের জন্য যেন পথের কাঁটা হয়।
ট্রাম্পের জন্য অভিবাসী আর মধ্যবিত্ত মার্কিনীদের এক বিরাট চ্যালেঞ্জের নাম কমলা। মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি নারী ভোটাররা কমলা হ্যারিসের মূল ভোট ব্যাংক হওয়ায় তার জয়ের সম্ভাবনাকে সবার ওপরে রেখেছে তারা।