এক হাজার গোলের মাইলফলক গড়া নিয়ে কোনো চাপ নিতে চান না ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তার চেয়ে বরং যতদিন খেলছেন, সেটা উপভোগ করতে চান সিআরসেভেন। পর্তুগালের হয়ে প্লাটিনাম কুইন্স ট্রফি জয়ের পর এমন মন্তব্য করেন তিনি। রোনালদো বলেন, এক হাজার গোল না হলেও কোনো আক্ষেপ থাকবে না। কারণ এই মুহূর্তে তিনিই সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক।
নিজস্ব প্রতিবেদক,
একটা বার চোখ বন্ধ করে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন! কোনো পক্ষ কিংবা বিতর্কের উর্ধ্বে গিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গেল ২০ বছর ধরে যা করে চলেছেন তা কেবল কল্পনাতেই সম্ভব। যে বয়সে পৌঁছানোর বহু আগেই ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সবাই, শোকেসে উঠিয়ে রাখে প্রিয় বুট জোড়া, সেই বয়সেই তিনি ছুটছেন ১ হাজার গোলের টানে।
দুই দশকে রোনালদোর পা আর মাথা ছুয়ে ১০০ মিটারের সবুজ ক্যানভাসে যা এসেছে, তা অনেক বিশ্বসেরা ফুটবলারের পক্ষেই অসম্ভব। কিন্তু পর্তুগিজ মহাতারকা তা করে গেছেন, এখনও করে যাচ্ছেন। কারণ তিনি সেরাদের সেরা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠদের কাতারে। আর তাই সবাই যেখানে ক্যারিয়ারে ফুলস্টপ টানে, সেখানে তার মাঝে চির তারুণ্য।
বড় হওয়ার দুর্নিবার বাসনা মানুষকে মহৎ করে তোলে। মাদেইরার গরীব পরিবারে বেড়ে উঠা রোনালদো তাদেরই একজন। প্রভাব প্রতিপত্তি, অর্থকড়ি আর গোল সবই লুণ্ঠিত তার পায়ে। এই বয়সেও তার হাতে প্রেস্টিজিয়াস প্লাটিনাম কুইন্স ট্রফি তুলে দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করেন আয়োজকরা। পর্তুগালকে লম্বা সময় প্রতিনিধিত্ব করায় এই সম্মানের যোগ্য দাবিদার তার চেয়ে আর কে আছেন?
রোনালদো ছুটছেন আপন গতিতে, ৯০৮ নট আউট! এই ফিগার দেখে চোখ কপালে উঠে। যুগে যুগে কত তরকা মহাতারকারাই তো এসেছেন। কারো নামের পাশে কি আছে এমন সংখ্যা? তিনি বিশেষ বলেই সম্ভব হয়েছে এমন অসম্ভব কিছু। শেষ পর্যন্ত এই কীর্তি যদি স্পর্শ করে চার অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগার, তা হবে অপার্থিব কিছু। রোনালদো ছুটছেন সে দিকেই। অমরত্বের অমৃত সুধা পান করে নিজেকে ধরাছোঁয়ার একেবারের বাইরে নিতে।
প্লাটিনাম কুইন্স ট্রফি জয়ের পর পর্তুগালের ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বলেন, ‘আমি বলেছিলাম ১ হাজার গোল করতে চাই। এরপর থেকে সবাই বিষয়টাকে অনেক সহজ মনে করছে। গেল মাসে আমি ৯০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছি। আমি সব কিছুই পরিস্থিতির ওপর ছেড়ে দিতে চাই। সামনের দিনে আমার পা কেমন সাপোর্ট দিচ্ছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি যদি ১ হাজার গোল করতে পারি সেটা অবশ্যই বিশেষ কিছু হবে। আর যদি না-ও পারি তবে আক্ষেপ থাকবে না। কারণ ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলের মালিক আমিই।’
পর্তুগালের জার্সিতে ২১৬ ম্যাচে ১৩৩ গোল রোনালদোর। ১৬ নভেম্বর নেশন্স লিগে আবারও মাঠে নামবেন সিআরসেভেন। এক হাজার গোলের পথে হয়তো এগিয়ে যাবেন আরও একধাপ। কবে থামবেন সেই প্রশ্ন তুলে অযথা একজন কিংবদন্তিকে বিব্রত করার কোনো কারণ নেই। ২০২৬ বিশ্বকাপও আলোকিত হোক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পায়ের জাদুতে।