১৩ মাস ধরে অপরাজিত রিয়াল। ৪২ ম্যাচ ধরে লা লিগায় ভিনিসিউস জুনিয়রদের হারাতে পারেনি কেউই। এল ক্লাসিকোয় হার এড়ালেই বার্সেলোনার টানা অপরাজিত থাকার রেকর্ডে ভাগ বসানোর সুযোগ তাদের সামনে। ঘরের মাঠের এল ক্লাসিকোর প্রথমার্ধে এমবাপ্পের গোল বাতিল হলেও লড়াইটা সমানে সমান হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বার্সেলোনার গতির কাছে খাবি খেল রিয়াল। রিয়ালের জালে একের পর এক বল পাঠাল বার্সেলোনা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা। রবার্ট লেভানদোভস্কি জোড়া গোল করেন। এছাড়া লামিনে ইয়ামাল ও রাফিনিয়া বাকি গোল দুটি করেন। এর আগে টানা চার এল ক্লাসিকোয় বার্সেলোনাকে হারিয়েছিল রিয়াল।
গোলশূন্য প্রথমার্ধ শেষে দ্বিতীয়ার্ধে এক ভিন্ন বার্সেলোনার দেখা মেলে। রিয়ালের আক্রমণগুলো ইন্টারসেপ্ট করে দ্রুত প্রতিআক্রমণ। তাতেই রিয়ালের রক্ষণভাগ ছত্রখান। লেভানদোভস্কির ব্যর্থতা ও গোলপোস্ট বাধা হয়ে না দাঁড়ালে বার্সার জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারতো। অন্যদিকে রিয়ালের হারে বড় দায় এমবাপ্পের। এই ফরাসি দুইবার জালে বল পাঠালেও দুবারই তা অফসাইডের জন্য বাতিল হয়। এছাড়া বেশ কয়েকবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও জালে বল পাঠাতে ব্যর্থ হন তিনি।
ঘরের মাঠে প্রথমার্ধে সুযোগ তৈরি করেও গোল করতে ব্যর্থ রিয়াল। অফসাইড ও সুযোগ নষ্টের মাশুল দিতে হয়েছে তাদের। দ্বিতীয়ার্ধেও অফসাইড ট্র্যাপে ভুগতে হয়েছে মাদ্রিদকে। ৫৩ মিনিটে গোলের দেখা পায় বার্সা। মাঝমাঠ থেকে কুবরাসির দারুণ এক ডিফেন্সচেরা পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে বাঁ দিক দিয়ে বল জালে পাঠান লেভানদোভস্কি। তারপরেই খেলার গতিপথ বদলে যায়। তিন মিনিট পর দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যায় তারা।
এবারও বল জালে পাঠান লেভা। ডি ইয়ং বাঁ দিকে লম্বা করে বল বাড়ান। সেই বল থেকে ক্রস করেন বালদে। অনেকটা লাফিয়ে হেড নিয়ে বল জালে পাঠান এই পোলিশ স্ট্রাইকার।
৬০ মিনিটে এমবাপ্পের শট সহজেই আটকে দেন পেনা। ৬৪ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ মিস করেন এমবাপ্পে। ভিনিসিউসের বানিয়ে দেয়া বলে একা গোলরক্ষককে পেয়েও গায়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন এই ফরাসি তারকা। ৬৬ মিনিটে বল জালে পাঠান এমবাপ্পে। কিন্তু অফসাইডের কারণে সে গোল বাতিল করেন রেফারি। এর ঠিক পরের মুহূর্তেই প্রতিআক্রমণে দ্রুত ওপরে উঠে বাঁয়ে পাস দেন ডি ইয়ং। রাফিনিয়া সে বল ধরে লেভাকে পাস দেন। লেভা শট নিলেও পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ৬৮ মিনিটে অল্পের জন্য হ্যাটট্রিক মিস করেন লেভানদোভস্কি।
৭০ মিনিটে মদ্রিচের নেয়া ফ্রি-কিকে ঠিকঠাক পা লাগাতে ব্যর্থ হন বেলিংহ্যাম। ৭১ মিনিটে মদ্রিচের বাড়ানো বল থেকে ফের একাকী গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন এমবাপ্পে।
৭৬ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করেন লামিনে ইয়ামাল। পেনার বাড়ানো বল এক খেলোয়াড়ের মাথা থেকে যায় রাফিনিয়ার পায়ে। তিনি ইয়ামালকে পাস বাড়ান। সহজেই বল জালে পাঠান এই স্প্যানিশ।
৮৪ মিনিটে রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন রাফিনিয়া। সঙ্গে লেগে থাকা লুকাস ভাসকেসকে পেছনে ফেলে বল জালে পাঠান এই ব্রাজিলিয়ান।
এর আগে প্রথমার্ধের খেলা গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয়। তবে ৩০ মিনিটে বল জালে পাঠিয়েছিলেন এমবাপ্পে। বেলিংহ্যামের লম্বা করে বাড়ানো বল জালে পাঠান এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। গোলের উল্লাসেও মাতেন। কিন্তু ভিএআরে চেক করে গোল বাতিল করেন রেফারি।
এই হারের আগে টানা ৪২ ম্যাচে কোনো হারের মুখ দেখেনি রিয়াল। এ সময়ে তারা ৩১ ম্যাচে জয় ও ১১টি ম্যাচে ড্র করেছে। রিয়ালকে হারিয়ে বার্সেলোনা লিগে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে গেল। ১১ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট বার্সার, সমান ম্যাচে রিয়ালের সংগ্রহ ২৪ পয়েন্ট।