গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় উপত্যাকা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে এ হামলা চালানোর কড়া মূল্য দিতে হয়েছে দেশটিকে। উপত্যকায় ইসরায়েলের সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৮৯০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) মেহের নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদেনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ৮৯০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সেনা, কর্মকর্তা, পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের আল আকসা স্টর্ম অপারেশন শুরুর পর তারা নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের যুদ্ধ মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। গত এক বছরে চলা সংঘর্ষে তারা নিহত হয়েছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ও ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন আল আকসা স্টর্ম অপারেশন শুরু করে। এতে ইসরায়েলের এক হাজার ২০০ জন নিহত হন। এরপর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছর ধরে অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এজন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে। জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিশরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে।
গাজাভিত্তিক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গত সপ্তাহে গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে, তা পাগলামির পর্যায়ে পড়ে… দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত অর্থেই এ অঞ্চলের ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। দুই হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এ অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।’