হাসিনা পরিবারের বিরুদ্ধে ৬০ হাজার কোটি টাকার লোটপাটের অভিযোগ তদন্তে রিট

Reporter Name / ৪৩ Time View
Update Time : শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫২ অপরাহ্ন

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নী টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নী টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ হাইকোর্টে রিটটি করেন। রিটকারীর আইনজীবী সাহেদুল আজম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।

রিটে অভিযোগের অনুসন্ধানের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, টিউলিপ সিদ্দিক ও তারেক আহমেদ সিদ্দিকসহ সংশ্লিষ্ট ১৪ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৯ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিটটি করা হয়।

আরও পড়ুন: আদালত চাইলে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর উদ্যোগ নেব: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নী টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাট করেছেন।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। শেখ হাসিনা এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র অদূর ভবিষ্যতে দেশের বিদ্যুতের ২০ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি ভিভিইআর ইউনিট ব্যবহার করে ২০২৪ সালের মধ্যে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি অবশ্যই বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। গণমাধ্যমে এমন ইতিবাচক প্রচারণার আড়ালে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন (রোসাটম) থেকে সোভিয়েত আমলের পারমাণবিক চুল্লি কেনার জন্য ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ লোপাট করেছেন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা। এর নির্মাণ ব্যয় তুলনামূলকভাবে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে গোপনে পাঁচ বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নিতে সহায়তা করেছে রাশিয়া। মালয়েশিয়ার ওইসব ব্যাংকে রাশিয়ার বিশেষ তহবিল থেকে এ অর্থ এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পারমাণবিক খাত নিয়ে কাজ করার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এছাড়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নকশা ও নির্মাণকাজ দেখাশোনা করতে পারেন- এমন পেশাদার ব্যক্তিও বাংলাদেশে নেই। তবুও বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি সই করে এবং রাশিয়াকে কোনো তত্ত্বাবধান ছাড়াই নির্মাণকাজের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দেয়। এ কারণে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা পাঁচ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন। তবে এ প্রকল্পে উচ্চ নির্মাণব্যয় নিয়ে সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিবেদন, নানা দিক থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ এখন গোটা বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের মতো শীর্ষ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের এতে জড়িত থাকার বিষয়টি সত্যিকার অর্থেই অস্বস্তিকর। পুরো বিষয়ে জনগণের আগ্রহ থাকায় এটি আর বিভাগীয় তদন্তে সীমাবদ্ধ না থেকে হাইকোর্ট ডিভিশন পর্যন্ত গড়িয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *