দেড় দশক ধরে দেশের সড়ক পরিবহন খাতে দাপিয়ে বেড়ানো মালিক ও শ্রমিক নেতারা এখন লাপাত্তা। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন এ খাতের অন্তত এক ডজন শীর্ষ নেতা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এদের সাম্রাজ্যেও বেজেছে পতনের ঘণ্টা। পরিস্থিতি প্রতিকূল হওয়ায় কেউ কেউ এরই মধ্যে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বাকিরা দেশেই আত্মগোপনে আছেন বলে জানা গেছে।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা বলছেন, বিগত ১৫ বছরে পরিবহনে নিয়ন্ত্রণহীন চাঁদাবাজি আর অপকর্মের কারণেই গা ঢাকা দিয়েছেন তারা। অভিযোগ আছে, তাদের কেউ কেউ অবৈধ অর্থে বনেছেন শতকোটি টাকার মালিক। বাড়ি গাড়িসহ দেশে–বিদেশে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়।
আওয়ামী লীগের আমলে পরিবহন ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ রাতারাতি খোলস বদলে বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে বর্তমান নেতারা, রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সম্পদের হিসাব নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তেমনি চাঁদাবাজমুক্ত পরিবহন খাত গড়ে তোলারও দাবি তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বাস মালিকদের প্রধান সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি। রাজধানীতে এই সংগঠনের নাম ছিল ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি। সর্বশেষ ঢাকার ইস্কাটনের ইউনিক হাইটস ভবনের চতুর্থ তলার অফিস থেকে যৌথভাবে এই দুই সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। মূলত এখান থেকেই সারা দেশের ৬৪ জেলাসহ সব উপজেলায় বাস মালিকদের নিয়ন্ত্রণ করা হতো। ৫ আগস্টের পর উভয় সংগঠনের নেতারা পালিয়ে যান। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ১৪ আগস্ট দুই সংগঠনের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির টানা ১৫ বছরের বেশি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা। রাজনীতির মাঠে নানা কারণে আলোচিত ও সমালোচিত এই নেতা এখন গা ঢাকা দিয়ে আছেন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ।